বুধবার, ০৩ জুলাই ২০২৪, ০৮:১৩ অপরাহ্ন
সারের পরিমিত ব্যবহারের ফলে ফসলের উৎপাদন ৮ থেকে ১৪ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা।
ভালো ফলনের জন্য সুষম সারের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। সার প্রয়োগে ধানের জাত, জীবনকাল ও ফলন মাত্রার ওপর ভিত্তি করে সারের মাত্রা ঠিক করা ও সারের কার্যকারিতা বৃদ্ধির জন্য কোন সার কখন ও কিভাবে প্রয়োগ করতে হবে তা নির্ধারণ করা দরকার। সার ব্যবহার করে অধিক উৎপাদন ও আর্থিকভাবে লাভবান হওয়াই সবার কাম্য। মাটি পরীক্ষার মাধ্যমে সারের মাত্রা নির্ণয় করা সর্বোত্তম। এছাড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহায়তায় সার সুপারিশ গাইড অনুযায়ী কিংবা অনলাইনে সার সুপারিশ নির্দেশিকা সফটওয়্যার (FRS) ব্যবহার করেও সারের মাত্রা জানা যায়।
গবেষকরা জানান, সুষম সার ব্যবহারে শতকরা ৮ থেকে ১৪ শতাংশ ফসল উৎপাদন বাড়ে এবং এতে বছরে বিশ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় করা সম্ভব।
বিগত বছরগুলোতে প্রতি বছর সার বাবদ সরকার প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়েছে। সারের আন্তর্জাতিক বাজারমূল্য বৃদ্ধিতে বর্তমানে এ খাতে সরকারের ভর্তুকির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩০ হাজার কোটি টাকারও বেশি ।
কৃষিবিদরা জানান, জমিতে এক কেজি ডিএপি সার ব্যবহার বাড়ালে ৪০০ গ্রাম ইউরিয়া সার কম ব্যবহার করলে হয়। এ ক্ষেত্রে টিএসপি সার ব্যবহারের প্রয়োজন নেই। এ বার্তাটি মাঠ পর্যায়ে না পৌঁছানোর কারণে হাজার হাজার কোটি টাকা সরকারের অতিরিক্ত খরচ করতে হচ্ছে। এ জন্য মাটি পরীক্ষার মাধ্যমে অঞ্চলভিত্তিক সার সুপারিশমালা ব্যবহার করে ফসল আবাদে সুষম সার ব্যবহারে কৃষকদের আগ্রহী করে তুলতে হবে।
অস্ট্রেলিয়ার মারডক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং প্রকল্প লিডার রিচার্ড ডব্লিউ বেল বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের সুপারিশসহ সুষম সার ব্যবহারে কৃষকেরা কতটুকু সুফল পেতে পারেন, তার একটি চিত্র তুলে ধরেন। তাঁর উপস্থাপনায় উঠে আসে কৃষকেরা সুষম সার ব্যবহার করলে বছরে ধান উৎপাদন বেশি হবে ৭৫ লাখ টন। সার্বিকভাবে বছরে লাভ হবে ২০ হাজার ৫০৪ কোটি টাকা।
জমিতে সারের অপচয় হওয়ায় আমদানি খরচ বাড়ছে বলে জানিয়েছেন কৃষিসচিব ওয়াহিদা আক্তার। তিনি বলেন, সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ডিএপি সারের ব্যবহার বাড়িয়ে ইউরিয়া সারের ব্যবহার কমিয়ে আনা। কিন্তু দেখা যাচ্ছে ইউরিয়ার ব্যবহার দিন দিন বাড়ছে। আবার ডিএপির ব্যবহারও বাড়ছে। এতে করে সারের অপচয় হচ্ছে এবং সার আমদানির খরচও বাড়ছে।
তিনি আরও বলেন, মাটি পরীক্ষার মাধ্যমে অঞ্চলভিত্তিক সার সুপারিশমালা ব্যবহার করে ফসল আবাদে সুষম সার ব্যবহারে কৃষকদের আগ্রহী করে তুলতে হবে। সরকার পরিমিত মাত্রায় সুষম সার ব্যবহারে গবেষণা ও ব্যবস্থাপনার ওপর ‘নিউট্রিয়েন্ট ম্যানেজমেন্ট ফর ডাইভারসিফাইড ক্রপিং ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।
