চেয়ে নগদায়নই হয়েছে বেশি। ৭ মাসে ৩ হাজার ৬৯ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্রের নিট বিক্রি কমেছে। জানুয়ারি শেষে সঞ্চয়পত্র থেকে সরকারের ঋণের পরিমাণ ৩ লাখ ৬০ হাজার ৯৪০ টাকায় নেমে এসেছে।
গত জুন শেষে সঞ্চয়পত্র বিক্রি থেকে সরকারের ঋণ ছিল ৩ লাখ ৬৪ হাজার ১০ কোটি টাকা। মূলত উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে নিজস্ব আয় দিয়ে সাধারণ মানুষ দৈনন্দিন ব্যয় নির্বাহ করতে পারছে না। ঠরণ মাস শেষে হাতে কোনো সঞ্চয়ও থাকছে না। বাধ্য অনেকে ব্যাংকে থাকা সঞ্চয় ভেঙে ফেলছে। তাছাড়া আমানতের মুনাফার ওপর সরকার বাড়তি কর আরোপ করেছে। ব্যাংক খাতে আমানত কমে যাওয়ার পেছনে এর ভূমিকাও আছে। পাশাপাশি অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে দেশের ব্যাংক খাতের প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থাহীনতাও বেড়েছে। ফলে গত বছরের জুন থেকেই ব্যাংক থেকে নগদ টাকা তুলে নেয়ার প্রবণতা অস্বাভাবিক বেড়ে যায়।
পরিস্থিতি সামাল দিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নতুন নোট ইস্যু করতেও বাধ্য হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, চলতি বছরের জানুয়ারিতে ব্যাংকের বাইরে থাকা নগদ অর্থের পরিমাণ ছিল ২ লাখ ৬২ হাজার ৯৯২ কোটি টাকা। ডিসেম্বরে এর পরিমাণ ছিল আরো বেশি। অন্যদিকে তারল্য সংকটে পড়লে দেশের বেসরকারি ব্যাংকগুলো রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী, জনতা, অগ্রণী ও রূপালী ব্যাংক থেকে অর্থ ধার করতো। কিন্তু এক বছর ধরে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোই তারল্য সংকটে ভুগছে। তাদেরই এখন প্রতিনিয়ত মুদ্রাবাজার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ধার করে চলতে হচ্ছে।
তারল্য সংকটের কারণে কলমানি বাজারে সুদহার রেকর্ড উচ্চতায় উঠেছে। একদিন মেয়াদি কলমানির সুদহার ৭ দশমিক ৫০ শতাংশ আর সাতদিন মেয়াদি আমানতের সুদহার ৯ শতাংশে গিয়ে ঠেকেছে। তাছাড়া আমদানি দায়ের পাশাপাশি সরকারি-বেসরকারি খাতের বিদেশী ঋণের কিস্তি পরিশোধের জন্য অব্যাহতভাবে রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। গত অর্থবছরে রিজার্ভ থেকে প্রায় সাড়ে ৭ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করা হয়। চলতি অর্থবছরে এখন পর্যন্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছে বিক্রি করা হয়েছে প্রায় ১১ বিলিয়ন ডলার। এর মাধ্যমে শুধু চলতি অর্থবছরেই ১ লাখ ১০ হাজার কোটিরও বেশি টাকা বাজার থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে চলে গেছে। দেশের ব্যাংক খাতে আমানত ও তারল্য সংকটের পেছনে বৈদেশিক বাণিজ্যের ভারসাম্যহীনতারও ভূমিকা রয়েছে।
গ্রামীণ মানুষের আমানত কমে যাওয়া প্রসঙ্গে ইসলামি ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মুহাম্মদ মুনিরুল মওলা জানান, আগে রেমিট্যান্সের অন্তত ২০ শতাংশ অর্থ ব্যাংক হিসাবে আমানত হিসেবে জমা থাকতো। কিন্তু এখন রেমিট্যান্সের ৫ শতাংশ অর্থও ব্যাংকে আমানত হিসেবে থাকছে না। বিদেশ থেকে অর্থ আসার সঙ্গে সঙ্গেই গ্রাহক পুরো টাকাই তুলে নিচ্ছে। মূলত জীবনধারণের ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় এমনটি হচ্ছে। ইসলামি ব্যাংকে এমন অনেক গ্রাহক আসছে যারা তাদের দীর্ঘদিনের সঞ্চয় ভেঙে ফেলছে। অনেকে মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগেই দীর্ঘমেয়াদি আমানত (ফিক্সড ডিপোজিট/ডিপিএস) তুলে নিতে আসছে। আর অল্প কিছু গ্রাহক আতঙ্কিত হয়েও আমানত তুলে নিয়েছে।
প্রধান কার্যালয়ঃ বাবর রোড, মোহাম্মদপুর, ঢাকা।
কর্পোরেট অফিসঃ
চৌধুরী ভিলা, বাসস্ট্যান্ড, জলঢাকা, নীলফামারী।
ইমেইলঃ bdbidrohinews@gmail.com
চৌধুরী মিডিয়া গ্রুপ এর একটি প্রকাশনা
© All rights reserved
Copyright © 2024 বিদ্রোহীনিউজ. All rights reserved.