1. maniknews1980@gmail.com : editor :
  2. jalshahina@gmail.com : news.editor : moslahnur rahman chowdhury
  3. admin@bidrohinews24.com : admin :
রবিবার, ০৭ জুলাই ২০২৪, ০৭:৫৮ পূর্বাহ্ন

সম্পাদকীয় – সাইবার নিরাপত্তা আইন, সংশ্লিষ্টদের মতামতকে গুরুত্ব দিন

মাহাদী হাসান মানিক
  • Time শনিবার, ২ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
  • ৮ Times

জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নানা সমালোচনা ও বিতর্কের পর সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পরিবর্তনের উদ্যোগ নিলেও কার্যত উদ্বেগ কাটেনি।

মানবাধিকারকর্মী ও সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠন বলছে, আগের আইনের মতো প্রস্তাবিত সাইবার নিরাপত্তা আইনও ক্ষমতাসীনদের স্বার্থে ব্যবহারের আশঙ্কা আছে।

অভিযোগ উঠেছে, লোক দেখাতে এ আইনটিতে শুধু কয়েকটি ধারায় সাজার পরিমাণ কমানো এবং জামিনযোগ্য ধারা বাড়ানো হয়েছে।

মৌলিক অধিকার, মতপ্রকাশ ও বাকস্বাধীনতার ক্ষেত্রে আশঙ্কাগুলো এখনো রয়েই গেছে। অর্থাৎ, সাইবার নিরাপত্তা আইনের শুধু মোড়ক পরিবর্তন হয়েছে। ক্ষমতাসীনরা যেভাবে আগের আইনটি তাদের স্বার্থে ব্যবহার করেছে, নতুন আইন একই উদ্দেশ্যে করা হয়েছে বলে মনে করছেন আইন বিশেষজ্ঞরা।

উপরন্তু অভিযোগ উঠেছে, আইনটি অনুমোদনের আগে সংশ্লিষ্ট অংশীজনের মতামত নেওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি। ইতোমধ্যে ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন, ২০২৩’-এর খসড়ায় চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। নতুন আইনে বিভিন্ন ধরনের অপরাধকে যেভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে, তার সঙ্গে পূর্ববর্তী আইনের কোনো ফারাক নেই। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে অজামিনযোগ্য ধারা ছিল ১৪টি।

নতুন আইনে ৪টি ধারাকে জামিন অযোগ্য করা হয়েছে। এ ছাড়া মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, জাতির পিতা, জাতীয় সংগীত বা জাতীয় পতাকার বিরুদ্ধে কোনো প্রকার প্রোপাগান্ডা বা প্রচারণার জন্য দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। তবে দণ্ডের মেয়াদ কমিয়ে ৭ বছর করা হয়েছে।

সবচেয়ে বড় বিষয়, এ আইনের গুরুত্বপূর্ণ অংশীজন তথা সাংবাদিক, আইনজীবী, মানবাধিকারকর্মীসহ নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের আইনটি তৈরির ক্ষেত্রে কোনো মতামত নেওয়া হয়নি। প্রস্তাবিত সাইবার নিরাপত্তা আইন নিয়ে জনগণের মতামত গ্রহণের জন্য সরকার ১৪ দিন সময় দিয়েছিল।

তবে এই সময়ে ঠিক কতটি মতামত এসেছে, কী ধরনের মতামত এসেছে এবং মতামত এসে থাকলে আইনের সর্বশেষ খসড়ায় তার প্রতিফলন ঘটেছে কিনা তাও জানা যায়নি, যা জনগণকে অবশ্যই জানানো উচিত। উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগে সমালোচিত ‘তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন’ বদলে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংসদে পাস করা হয়েছিল।

এবারও জাতীয় নির্বাচনের আগে একই উদ্যোগ দেখা গেল। স্বভাবতই আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু হচ্ছে কিনা সে সম্পর্কে গণমাধ্যম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। সাইবার নিরাপত্তা আইন সঠিক তথ্য সংগ্রহ ও প্রকাশে হুমকি হয়ে দেখা দেবে কিনা সে বিষয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের উদ্বেগ থাকাটা তাই স্বাভাবিক।

এ অবস্থায় সরকারকে এটা অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে যে, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের পরিবর্তে যে সাইবার নিরাপত্তা আইন করা হয়েছে, তাতে ওই আইনের দমনমূলক বৈশিষ্ট্যগুলো ফিরিয়ে আনা হবে না।

বিরোধী মত দমনে ও মুক্ত মতপ্রকাশকে বাধাগ্রস্ত করতে আগের ডিজিটাল আইন যেভাবে ব্যবহৃত হয়েছে, প্রয়োজনীয় সংস্কার না করলে এ আইনও যে নামেই আসুক, হয়রানি কমবে না।

অবশ্য মন্ত্রিসভা প্রস্তাবিত আইনের খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিলেও অংশীজনদের সঙ্গে সংশোধনীগুলো নিয়ে আলোচনা করার সুযোগ এখনো ফুরিয়ে যায়নি।

আমরা আশা করব, দেশি-বিদেশি মহলের দাবি ও পরামর্শের প্রতি সম্মান জানিয়ে এ ব্যাপারে কার্যকর উদ্যোগ নেবে সরকার।

এই বিভাগের আরও খবর
চৌধুরী মিডিয়া গ্রুপ এর একটি প্রকাশনা © All rights reserved
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: FT It