কুড়িগ্রামের রৌমারী সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে বাংলাদেশি যুবক নিহতের ঘটনায় বাহিনীটির অজ্ঞাতনামা সদস্যদের আসামি করে রৌমারী থানায় মামলা হয়েছে। গতকাল সোমবার নিহতের বাবা বাদী হয়ে মামলা করেছেন।
মামলা হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন রৌমারী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রূপ কুমার সরকার।
গত শনিবার দিবাগত রাতে রৌমারী উপজেলার শৌলমারী ইউনিয়নের বেহুলারচর সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি যুবক মানিক মিয়া (৩০) নিহত হন। তিনি বেহুলারচর গ্রামের আব্দুল বাতেনের ছেলে।
স্থানীয় লোকজন জানান, কয়েকজন সহযোগীসহ সীমান্তে গরু চোরাকারবারের জন্য গিয়েছিলেন মানিক। বিএসএফ তাঁদের লক্ষ্য করে কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়ে। এতে মানিক গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। আইনি জটিলতা এড়াতে মানিকের সহযোগী ও পরিবারের সদস্যরা লাশ নিয়ে সটকে পড়েন। পরদিন দুপুরে পার্শ্ববর্তী বন্দবের ইউনিয়নের বাঞ্চারচর গ্রামে মানিকের এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে তাঁর গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
এদিকে মামলার এজাহারের বরাতে ওসি রূপ কুমার সরকার জানান, বাদী উল্লেখ করেছেন তাঁদের বাড়ির একটি গরু হারিয়েছিল। মানিক শনিবার গভীর রাতে বাড়ি থেকে ৩০০ গজ পূর্বে সীমান্তের কাছে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে সেই গরু খুঁজতে যান। এ সময় বিএসএফের সদস্যদের ছোড়া গুলিতে মানিক নিহত হন।
ওসি বলেন, ‘অজ্ঞাত বিএসএফ সদস্যদের আসামি করে নিহতের বাবা মামলা করেছেন। বিষয়টি তদন্ত চলছে। ময়নাতদন্তের পর লাশ পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।’
আইনজীবীরা বলছেন, বাংলাদেশের অভ্যন্তরে সংঘটিত ঘটনার ক্ষেত্রে দেশে মামলা হতে পারে। তবে ঘটনা যদি অন্য রাষ্ট্রের সীমানায় সংঘটিত হয় তাহলে ক্ষুব্ধ ব্যক্তি বৈধ কাগজপত্রের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রে গিয়ে থানায় মামলা করতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে এটি তদন্ত সাপেক্ষ বিষয় যে ঘটনা কোথায় এবং কার দ্বারা সংঘটিত হয়েছে।
এদিকে সীমান্তে গুলিতে বাংলাদেশি যুবক নিহতের ঘটনায় গতকাল বিকেলে বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যে পতাকা বৈঠক হয়েছে। এ সময় গুলি করার কথা স্বীকার করেছে বিএসএফ। তবে বৈঠকে বিএসএফের দাবি, মানিক ও তাঁর সহযোগীরা ভারতীয় সীমান্তে অনুপ্রবেশ করেছিলেন।
রৌমারী সীমান্তের দায়িত্বে থাকা জামালপুর বিজিবি-৩৫ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবদুল্লাহ আল মাশরুকী বলেন, ‘পতাকা বৈঠকে বিএসএফ জানিয়েছে, তাদের সীমানায় সন্দেহভাজনদের অনুপ্রবেশের কারণে তারা গুলি ছুড়েছে। গুলির ঘটনায় আমরা প্রতিবাদ জানিয়েছি।’