1. maniknews1980@gmail.com : editor :
  2. jalshahina@gmail.com : news.editor : moslahnur rahman chowdhury
  3. admin@bidrohinews24.com : admin :
রবিবার, ০৭ জুলাই ২০২৪, ০৭:৪৮ পূর্বাহ্ন

সম্পাদকীয় – সড়কে বেড়েই চলছে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা

মাহাদী হাসান মানিক
  • Time বুধবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
  • ৪ Times

সড়ক দুর্ঘটনা এমনিতেই আমাদের দেশে একটি সামাজিক ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে। এর মধ্যে নতুন বিপদ হয়ে দেখা দিয়েছে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা। গাড়ি যত ছোট হয়, ঝুঁকি ততই বাড়ে। যে গাড়ির চাকার সংখ্যা কম, তার দুর্ঘটনার হার ততই বেশি।

মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় প্রতিদিন সারা দেশে হতাহতের ঘটনা ঘটছে। দুর্ঘটনায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে যুব সমাজ। এখন যত মানুষ সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান, তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয় মোটরসাইকেল আরোহীদের। গত তিন বছরে সড়কে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় মারা গেছে প্রায় ৫ হাজারের বেশি মানুষ।

বর্তমানে দেশে নিবন্ধিত যানবাহনের সংখ্যা ৫৬ লাখ। তার মধ্যে মোটরসাইকেলের সংখ্যা ৪০ লাখেরও বেশি। বিআরটিএর হিসাবে ২০১৫ সাল থেকে মোটরসাইকেলের নিবন্ধন উচ্চ হারে বাড়তে থাকে। শুধু ২০২২ সালেই পাঁচ লাখেরও বেশি নতুন মোটরসাইকেলের নিবন্ধন দেওয়া হয়েছে।

চলতি বছরের জানুয়ারি মাসেই মোটরসাইকেলের নিবন্ধন দেওয়া হয়েছে ৩২ হাজারেরও বেশি। ২০১০ সালে দেশে নিবন্ধিত মোটরসাইকেলের সংখ্যা ছিল সাড়ে সাত লাখের মতো। এরপর ২০১৪ সাল পর্যন্ত প্রতি বছর গড়ে লাখ খানেক মোটরসাইকেল যুক্ত হয়।

এই দুর্ঘটনাগুলো ঘটার পেছনে বেশ কিছু কারণ আছে। সড়কে প্রায় ৩০ ভাগ দুর্ঘটনাই মোটরসাইকেল আরোহীর ঘন ঘন লেন পরিবর্তন, নিয়ম না জানা বা জানলে না মানা, যানজট এড়িয়ে তাড়াতাড়ি গন্তব্যে পৌঁছার কারণে ঘটছে। দেখা যায় সড়কে সামান্য যানজট এড়াতে আইন ভেঙে ফুটপাতে উঠে যান মোটরসাইকেল চালকরা। এতে দুর্ঘটনা তো ঘটছেই, দুর্ভোগও পোহাতে হচ্ছে পথচারীদের।

আবার দেখা যায় রাইড শেয়ারিং অ্যাপ্লিকেশনের কল্যাণে রাস্তায় মোটরসাইকেলের সংখ্যা বহুগুণ বেড়ে গেছে। এইসব চালকদের প্রধান লক্ষ থেকে যত দ্রুত সম্ভব আরোহীকে গন্তব্যে পৌঁছে দিয়ে নতুন আরোহী নেওয়া ফলে দেখা যায় বেশীরভাগ চালকই ট্রাফিক আইন না মেনে নির্ধারিত গতির সীমা অতিক্রম করে মোটরসাইকেল চালানোর কারণে দুর্ঘটনায় পড়ে থাকে।

অন্য দিকে দেখা যায় অধিকাংশ মোটরসাইকেল চালক বয়সে কিশোর কিংবা তরুণ, যাদের নেই কোন ট্র্যাফিক জ্ঞান কিংবা ড্রাইভিং লাইসেন্স। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত চালক ও আরোহীদের অর্ধেকের বয়সই (৫১.৪২%) ১৪ থেকে ২০ বছরের মধ্যে। দেখা যাচ্ছে প্রতিবেশীদের সাথে পাল্লা অথবা সন্তানদের আবদার মেটাতে অভিভাবকরা অপ্রাপ্ত বয়স্ক সন্তানদের হাতে তুলে দিচ্ছে মোটরসাইকেলের চাবি।

সারা দেশে ৪০ লাখেরও বেশি মোটরসাইকেলের বিপরীতে ভিতর লাইসেন্স রয়েছে মাত্র ১৮ লাখ চালকের। পাশাপাশি দেশে মোটরসাইকেল আমদানির করা শর্ত শিথিল করার কারণে যত্রতত্র মোটরসাইকেল পাওয়া যাচ্ছে এতে করে যেকেউই কোন প্রশিক্ষণ ছাড়াই পাড়ছে মোটরসাইকেল চালাতে। পাশাপাশি হেলমেট পরিধান না করার অভ্যাসের কারণেও বহু মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। এই মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা রোধ করতে সরকারকে এখনি কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে হবে।

মোটরসাইকেলের দৌরাত্ম্য কমিয়ে আনার জন্য জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে সমাজের সব শ্রেণিপেশার মানুষ, সড়ক ব্যবস্থাপনা ও ব্যবহারকারী সবাইকে সংযুক্ত করে দেশব্যাপী নিরাপদ সড়কের জন্য প্রচার চালাতে হবে। দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ বৃদ্ধি করতে হবে। আইন তৈরি করে অনুমোদিত এলাকার বাইরে মোটরসাইকেল রাইড-শেয়ারিং করতে দেওয়া যাবেনা। মোটরসাইকেলের জন্য পৃথক লেনের ব্যবস্থা করতে হবে।

মোটরসাইকেল চালক হেলমেট পরিধান করলে দুর্ঘটনায় নিহত হওয়ার আশঙ্কা ৪০ শতাংশ হ্রাস পায় এবং মারাত্মক আহত হওয়ার আশঙ্কা ২৫ থেকে ৭৫ শতাংশ হ্রাস পায়। এ কারণে মোটরসাইকেল চালক ও আরোহীদের নিজেদের জীবন বাঁচাতেই হেলমেট পরিধান করতে হবে। সর্বোপরি অভিভাবকদের আরো সচেতন হতে হবে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এই মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব।

এই বিভাগের আরও খবর
চৌধুরী মিডিয়া গ্রুপ এর একটি প্রকাশনা © All rights reserved
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: FT It