1. maniknews1980@gmail.com : editor :
  2. jalshahina@gmail.com : news.editor : moslahnur rahman chowdhury
  3. admin@bidrohinews24.com : admin :
রবিবার, ০৭ জুলাই ২০২৪, ০৮:১৭ পূর্বাহ্ন

সম্পাদকীয় – পলিথিনের ব্যবহার বন্ধে কঠোর হোন

মাহাদী হাসান মানিক
  • Time শনিবার, ১৪ অক্টোবর, ২০২৩
  • ৭ Times

পলিথিন পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর হলেও এর ব্যবহার বেড়েই চলেছে। কেবল রাজধানী ঢাকাতেই প্রতিদিন অন্তত দেড় কোটি পলিথিন ব্যাগ একবার ব্যবহার করে বাইরে ফেলে দেওয়া হচ্ছে।

এর যথেচ্ছ ব্যবহারে বিশেষ করে বর্ষাকালে নগর-মহানগরে পয়ঃনিষ্কাশনের ড্রেন, নালা-নর্দমা ভরাট হচ্ছে; দূষিত হচ্ছে পানি। এটি নদী ও সাগরের তলদেশে জমা হয়ে জীববৈচিত্র্য ও সামুদ্রিক জীবের মারাত্মক ক্ষতি করছে। পরিবেশ, জনজীবন, জলাধার, ভূমি, নদী, সমুদ্র ও প্রকৃতির জন্য হুমকিস্বরূপ পলিথিন নিষিদ্ধ হলেও এর উৎপাদন, বিপণন ও বিক্রি অনেকটাই ওপেন সিক্রেট। প্রশাসনের নাকের ডগায় পলিথিন এবং নিম্নমানের প্লাস্টিক পণ্য দেদারসে বিক্রি ও ব্যবহার করা হলেও এসব দেখার যেন কেউ নেই।

পলিথিনের বিকল্প পণ্য বাজারে থাকলেও সেগুলোর ব্যবহার অতি সামান্য। এসব বিকল্প পণ্যের ব্যবহার বাড়ানোর উদ্যোগও দৃশ্যমান নয়। তাই সহজলভ্য পলিথিনে বাজার সয়লাব। পলিথিনে ভরে গেছে দেশের নদী, এমনকি সাগরের তলদেশও। সামান্য বৃষ্টিতে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন শহরে জলাবদ্ধতার অন্যতম কারণ পলিথিন এবং প্লাস্টিক বর্জ্য। বিশেষজ্ঞদের মতে, পলিথিন ও প্লাস্টিক পণ্যের ব্যবহার সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করা না হলে ভবিষ্যতে বড় ধরনের বিপর্যয়কর পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।

গবেষকরা বলছেন, এভাবে চলতে থাকলে আগামী দিনে অনেক নদনদীতে মাছ আর পাওয়া যাবে না। পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫-এর বিধান অনুসারে দেশে ২০০২ সাল থেকে পলিথিন ব্যাগ উৎপাদন, বিপণন, পরিবহণ ও ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়। এতে পলিথিনের ব্যবহার কিছুটা কমে আসে। কিন্তু অসাধু ব্যবসায়ীরা নতুন উদ্যমে পলিথিন ফিরিয়ে আনেন। প্রশাসনের সঠিক তদারকির অভাবে দেশে এখন পলিথিন ও প্লাস্টিক পণ্যের ব্যবহার বেড়েই চলেছে।

এ ক্ষেত্রে আইনের কার্যকর প্রয়োগ না থাকায় মারাত্মক বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য। জানা যায়, মাটিতে প্লাস্টিকের তৈরি টক্সিক রাসায়নিক পদার্থ উদ্ভিদ খাদ্য হিসাবে গ্রহণ করে, যা একপর্যায়ে খাদ্যচক্রে মিশে যায়। প্লাস্টিক মানবদেহে বহু জটিল ব্যাধির পাশাপাশি ক্যানসারও সৃষ্টি করে। নবজাতকের সবচেয়ে নিরাপদ খাবার মাতৃদুগ্ধেও বিজ্ঞানীরা মাইক্রোপ্লাস্টিকের উপস্থিতি শনাক্ত করেছেন।

দেশের নদীগুলোর তলদেশে পলিথিনের পুরু স্তর পড়েছে; কয়েক ফুট পুরু পলিথিনের আস্তরণ জমার কারণে নদীদূষণের পাশাপাশি জীববৈচিত্র্যও ধ্বংস হচ্ছে। পলিথিনের প্রভাবে নদীতে মাছের সংখ্যাও কমে যাচ্ছে। সমুদ্রের তলদেশে পলিথিন-প্লাস্টিকের স্তর বাড়তে থাকলে আগামী ৫০ বছর পর সমুদ্রে পলিথিনের চেয়ে মাছের পরিমাণ কমে যাবে। দেশে পলিথিনের উৎপাদন, বিপণন, পরিবহণ নিষিদ্ধ করার পরও আইন বাস্তবায়নে র্কর্তৃপক্ষের সদিচ্ছা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।

পাট থেকে উৎপাদিত পচনশীল পলিমার ব্যাগ পলিথিনের বিকল্প হতে পারে। এটি পরিবেশবান্ধব। পাটের তৈরি এ পলিব্যাগ দেখতে বাজারের সাধারণ পলিথিন ব্যাগের মতো হলেও এটি অনেক বেশি টেকসই ও মজবুত। এর ব্যাপক উৎপাদন ও ব্যবহারের উদ্যোগ নেওয়া দরকার। পলিথিন নিষিদ্ধের আইনের বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার পাশাপাশি জনসচেতনতা বৃদ্ধির পদক্ষেপ নিতে হবে।

এই বিভাগের আরও খবর
চৌধুরী মিডিয়া গ্রুপ এর একটি প্রকাশনা © All rights reserved
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: FT It